কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে নামাজরত অবস্থায় রাশেদা বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধ ও মাথায় ছুরিকাঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় দুর্বত্তরা রাশেদা বেগমের হাতের, কানের ও গলার প্রায় দুই ভরি স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়।
নিহত রাশেদা উপজেলার জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের গোয়ারুয়া মানিকমুড়া গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের স্ত্রী। তার এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে।
ছেলে বিল্লাল হোসেন পোল্যান্ড প্রবাসী। তিনি ঘরে একা থাকতেন। আর মেয়েরা থাকেন শ্বশুরবাড়িতে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সকালে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই নারীকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত রাশেদা বেগমের ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মায়ের সাথে আমার সর্বশেষ কথা হয়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মায়ের মুঠোফোনে আবার ফোন দিলে মুঠো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পার্শ্ববর্তী ঘরের মামাতো বোন জ্যোৎস্না বেগমকে আমাদের ঘরে গিয়ে মায়ের খবর নিতে বলি।
সে ঘরে গিয়ে ঘরের সব দরজা খোলা অবস্থায় এবং সব কক্ষের বৈদ্যুতিক লাইট বন্ধ দেখতে পান। পরে তিনি ঘরের বৈদ্যুতিক লাইট জ্বালিয়ে আমার মাকে নামাজের জানাযার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমি শ্বশুরবাড়ি গোয়ারুয়া গ্রাম থেকে বাড়ি এসে আমার মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাই। এক পর্যায়ে মায়ের সম্পূর্ণ শরীর কালো হয়ে যায়। পরে মাকে লাকসাম প্রাইভেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাত ৮টায় মাকে বাড়ি এসে পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন করে মাকে হত্যা করার কথা জানাই। পরে রাত প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মায়ের লাশ থানায় নিয়ে যায়।
জান্নাতুল ফেরদাউস আরো বলেন, আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার মায়ের হত্যাকারীদের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা প্রশাসনের নিকট আমাদের নিরপত্তা দাবি করছি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, স্থানীয় লোকজন আমাকে ঘটনাটি জানায়। ওই মহিলা ঘরে একা ছিল। নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ বাদী হয়ে মামলা করেনি। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।